• Sat. Aug 16th, 2025

Azad 24

Learn Today Lead Tomorrow +8801933307999

আমাদের দুনিয়ার জীবনে আমরা যত রকমের কাজ করি না কেন তার চুলচেরা হিসাব দিতে হবে পরকালের জীবনে। এতে কোনো সন্দেহ নেই। যে ব্যক্তি দুনিয়ার জীবনে সৎকর্ম করে ইহলোক ত্যাগ করেছেন তার জন্য রয়েছে চিরস্থায়ী জান্নাত লাভের নিশ্চয়তা আর যিনি অন্যায়, পাপ, আর গুনাহের মধ্যে জীবন শেষ করে মৃত্যুবরণ করেছেন তার জন্য রয়েছে জাহান্নামের আজাব।

তাই দুনিয়ার বুকে আমাদের কোনো ধরনের অন্যায় অপকর্ম করে জীবনযাপন করা চলবে না।

আল্লাহকে অন্তরে ভয় করে কোরআন ও হাদিসের আলোকে দুনিয়ার বুকে জীবনযাপন করতে হবে। তাহলেই পাওয়া যাবে সৎকর্মের জন্য পুরস্কার জান্নাত।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, আর নিশ্চয়ই আপনার রব তাদের প্রত্যেককে তার কর্মফল পুরোপুরি দেবেন। তারা যা করে তিনি তো সে বিষয়ে সবিশেষ অবহিত। (সুরা হুদ, আয়াত ১১১)। প্রত্যেকে নিজ নিজ কৃতকর্মের জন্য দায়ী এবং কেউ অন্য কারও ভার গ্রহণ করবে না। (সুরা আল আনয়াম, আয়াত ১৬৪)।

যে কেউ কোনো অসৎ কাজ করবে, সে জন্য তাকে শাস্তি দেওয়া হবে। (সুরা নিসা, আয়াত ১২৩) আয়াতটি যখন নাজিল হয় তখন সাহাবারা দুঃখিত ও চিন্তাযুক্ত হয়ে পড়েন এবং রসুল (সা.)-এর কাছে গিয়ে বলেন, এ আয়াতটিতে কোনো কিছুকেই ছাড় দেওয়া হয়নি। সামান্য মন্দ কাজ করলেও তাকে শাস্তি দেওয়া হবে। রসুল (সা.) বললেন, চিন্তা করো না, সাধ্যমতো কাজ করে যাও। কেননা তোমরা দুনিয়াতে যে কোনো কষ্ট বা বিপদে পড় তাতে তোমাদের গুনাহর কাফফারা এবং মন্দ কাজের শাস্তি হয়ে থাকে। এমনকি যদি কারও পায়ে কাঁটা ফোটে, তাও গুনাহর কাফফারা বৈ অন্য কিছু নয়। (মুসলিম, ২৫৭৪)।

অন্য এক হাদিসের বর্ণনায় এসেছে, মুসলিম ব্যক্তি যখন দুনিয়াতে যে কোনো দুঃখ-কষ্ট, অসুখ-বিসুখ অথবা ভাবনা-চিন্তার সম্মুখীন হয়, তা তার গুনাহর কাফফারা হয়ে যায়। (বুখারি ৫৬৪১, মুসলিম ২৫৭৩)। সুবহানাল্লাহ। আল্লাহ বলেন, কেউ অণু পরিমাণ সৎকাজ করলে সে তা দেখবে আর কেউ অণু পরিমাণ অসৎ কাজ করলে সে তাও দেখবে। (সুরা জিলজাল, আয়াত ৭-৮)।

আমাদের মনে রাখতে হবে ইমান ব্যতীত কোনো সৎকর্মই আল্লাহর কাছে সৎকর্ম নয়। সে জন্য যে ব্যক্তির মধ্যে অণু পরিমাণ ইমান থাকবে তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়া হবে। সুতরাং মুমিন ব্যক্তি গুনাহগার হলেও চিরকাল জাহান্নামে থাকবে না। আর কাফের ব্যক্তি শত সৎকাজ করলেও ইমানের অভাবে সে হবে জাহান্নামের অধিবাসী।

কোনো ছোট সৎকাজ যেমন তুচ্ছ নয় তেমনি কোনো অসৎ কাজ তা যত ছোটই হোক না কেন তাকে কখনোই ছোট মনে করা সমীচীন নয়। রসুল (সা.) বলেছেন, একটি খেজুর দান করে হলেও কিংবা একটি ভালো কথার বিনিময়ে হলেও তোমরা জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচো। (বুখারি, ৬৫৪০)।

রসুল (সা.) আরও বলেছেন, হে আয়েশা, যেসব গুনাহকে ছোট মনে করা হয়, সেগুলো থেকে দূরে থাক। কারণ আল্লাহর দরবারে সেগুলো সম্পর্কেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। (মুসনাদে আহমদ, ৬/৭০)। রসুল (সা.) আরও বলেছেন, সাবধান ছোট গুনাহসমূহ থেকে নিজেকে রক্ষা কর। কারণ সেগুলো সব মানুষের ওপর একত্র হয়ে তাকে ধ্বংস করে দেবে। (মুসনাদে আহমদ, ১/৪০২)।

আল্লাহ বলেন, আজ প্রত্যেককে তার কৃতকর্মের প্রতিফল দেওয়া হবে, আজ আর কারও প্রতি জুলুম করা হবে না। আল্লাহ হিসাব গ্রহণে তৎপর। (সুরা আল মুমিন, ১৭)।

শেষ বিচারের দিন প্রতিটি মানুষ তার দুনিয়ার কর্মফল অনুযায়ী ন্যায্য প্রতিদান পাবেন। সৎকাজ করলে সে অনুযায়ী পুরস্কার আর অসৎ কার্যকারীর জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি। আল্লাহ রব্বুল আলামিন আমাদের সবাইকে আল্লাহর দেওয়া কিতাব কোরআনের বিধান ও রসুলের আদেশ নিষেধ মেনে জীবন গড়ার তৌফিক দান করুন। তাহলে পরকালীন জীবন হবে অনাবিল শান্তির।

লেখক: অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার

By azad24

www.azadservice.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *